স্টাফ রিপোর্টারঃবাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ কর্তৃক সংগঠনের নৈতিকতা ও আদর্শ পরিপন্থী কার্যক্রম চালানোর অভিযোগে বহিষ্কৃত হওয়া পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী মোঃ নাঈম হোসেনের কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ পবিপ্রবির সর্বস্তরের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ছাত্রছাত্রীরা।
সূত্রমতে, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অনুষদের সাবেক ডিন প্রফেসর ড. আব্দুল আহাদ বিশ্বাসের স্বাক্ষর জাল করে দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকা কর্তৃপক্ষের অনুকূলে বিজ্ঞাপন বিল বাবদ প্রদেয় ৮ হাজার ২৮০ টাকার একটি চেক (হিসাব নং-১১১৮০, চেক নং-এসবিএলকিউ ২৬০০২০৪) জালিয়াতি করে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে নাঈমের বিরুদ্ধে। দৈনিক ইত্তেফাক কর্তৃপক্ষ এ ঘটনায় নিয়োগ বাতিল করেন।
এ ঘটনায় ওই সাবেক ডিন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর ২০১৭ সালের ১৯ নভেম্বর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে কৃষি রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক মোঃ মনিরুজ্জামানকে আহ্বায়ক, উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. জুয়েল হাওলদারকে সদস্য এবং পবিপ্রবির অর্থ ও হিসাব শাখার পরিচালক( ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ জসিম উদ্দিনকে সদস্য সচিব করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদনে নাইম হোসেনকে চেকটি জালিয়াতির দায়ী অভিযুক্ত করে। এ তদন্ত প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ রিজেন্ট বোর্ড তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। একই সাথে তাকে কেন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না এই মর্মে কারণ দর্শানোর নোটিশ অভিযুক্ত নাঈম হোসেন ও তার অভিভাবকদের বরাবর প্রেরণের সিদ্ধান্ত হয়।
অভিযোগ রয়েছে, বিভিন্ন ভয় ভীতি প্রদর্শন করে নাঈম হোসেন অদ্যাবধি ওই আদেশ কার্যকর করা থেকে প্রশাসনকে নিবৃত্ত করে রেখেছেন।
এছাড়াও ২০১৭ সালের ০৩ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ থেকে নাঈম হোসেনকে বহিষ্কার করা হয়।
ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কারের ঘটনার পর কিছুদিন চুপচাপ থেকে নাঈম হোসেন পুনরায় দৃশ্যপটে আবির্ভূত হন। পুনরায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতা পরিচয় দিয়ে দুমকি উপজেলায় নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস ঘেরাওসহ নানা অপকর্মে নাঈম হোসেন জড়িয়ে পড়েন।
এছাড়াও অভিযোগ রয়েছে, মোঃ নাঈম হোসেন জাতীয় পার্টির সাবেক মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার ও প্রেসিডিয়াম সদস্য হাজী সাইফুদ্দিন মিলনকে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
মোঃ নাঈম হোসেনের একাধিক সহপাঠী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের একাধিক শিক্ষার্থী জানান, হাফ সেঞ্চুরি সাবজেক্টে ফেল করা নাঈম হোসেন একজন কোয়ালিটিলেস ছাত্র এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হওয়ার কোন যোগ্যতাই তার নাই। তার বিষয়ে কথা বলা সময়ের অপচয় ছাড়া আর কিছু না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের নির্দেশ অমান্য করে তার ছাত্রত্ব বহাল রাখা যায় কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্টার ডঃ সন্তোষ কুমার বসু বলেন, আমি এরূপ ঘটনা শুনেছি। কিন্তু তখন আমি বিদেশে ছিলাম।আপনি তৎকালীন রেজিস্ট্রার ও বর্তমান ভাইস চ্যান্সেলর এর সাথে কথা বলুন।
এ বিষয়ে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত বলেন,নাঈম হোসেনকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল।কিন্তু আগের ভিসি মহোদয় সম্ভবত তা স্থগিত করে গেছেন। এ বিষয় ব্যবস্থা নিতে হলে নতুন করে তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে।