ঢাকা ০৭:৫২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫
সংবাদ শিরোনামঃ
বাউফলে বিএনপির তিন গ্রুপের পৃথক পৃথক দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠিত পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ক্ষতিগ্রস্থদের অবস্থান কর্মসূচি দুমকিতে অসুস্থ মায়ের আর্তনাদ, ভরণপোষণ দেয় না সন্তানরা তাহলে কি টাকার কাছেই বিক্রি হচ্ছে বিএনপির পদ পদবী বেনাপোলে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মদিন পালন দুমকিতে গভর্নিং বডি নির্বাচনে স্বচ্ছতার দাবিতে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন সনমান্দী ইউনিয়ন ৫ নং ওয়ার্ড জামায়াতের সম্মেলন অনুষ্ঠিত বন্দর থানা জামায়াতের উদ্যোগে শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র উপহার রায়পুরাতে ভ্রাম্যমাণ আদালতকে লক্ষ্য করে গুলি বন্দর থানা কৃষক দলের পক্ষ থেকে মহানগর সাধারণ সম্পাদককে ফুলেল শুভেচ্ছা

চমক যেন হয় দেশপ্রেমের – ফরিদ আহমেদ রবি

বাংলার শিরোনাম
  • আপডেটঃ ০৯:৩৮:৫৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ জানুয়ারী ২০২৫
  • / 35

চমক যেন হয় দেশপ্রেম

চমক যেন হয় দেশপ্রেমের – ফরিদ আহমেদ রবি

চমকের রাজনীতি আর রাজনীতির চমকে দেশবাসী বার বার চমকিত হয়েছে। এখনও চমকের ধারা অব্যাহত রয়েছে। রাজনৈতিক চমক সৃষ্টিতে নারায়ণগঞ্জ সবসময় শীর্ষে অবস্থান করে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে চমকের অধিকাংশই হয় নেতিবাচক।

চমক নিয়ে আসছে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির নতুন কমিটি“- শিরোনামে প্রকাশিত একটি সংবাদ সম্প্রতি নজরে আসলো। সংবাদ প্রতিবেদনে শীর্ষ পদের সম্ভাব্য নেতাদের সম্ভাবনা নিয়ে আলোকপাত করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে জেলা কমিটি বাতিল হওয়ায় নতুন কমিটি গঠিত হবে এটাই স্বাভাবিক। সংগত কারনেই পদপ্রার্থী নেতাদের দৌড় ঝাঁপ শুরু হবে, তাও খুবই স্বাভাবিক। কোন অভিযোগের ভিত্তিতে কমিটি বাতিল হয়েছে তা প্রকাশ হোক বা না হোক তাতে কিছু আসে যায় না। তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটি গঠনের যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে সেটিই গুরুত্বপূর্ণ।

এমন প্রক্রিয়া রাজনৈতিক দলের ভিতর গণতন্ত্র চর্চার প্রকৃষ্ট দৃষ্টান্ত হিসেবে চিহ্নিত হবে যদি তা সত্যিকার অর্থেই দলীয় গণতন্ত্রের স্বার্থে হয়ে থাকে, যদি তা অব্যাহত থাকে। এমন আদর্শ ভিত্তিক অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত সৃষ্টির জন্য বিএনপির নীতিনির্ধারক মহল নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবি রাখে। দলীয় কমিটির নেতা মানেই যেন পেশীশক্তির অধিকারী অর্থ বিত্তশালী কোন ব্যক্তির প্রতিচ্ছবি। জনভিত্তি,আদর্শ, শিক্ষা, নেতা হওয়ার ক্ষেত্রে কোন প্রভাব ফেলে না। তাইতো নারায়ণগঞ্জে রাজনৈতিক দলের নেতা মানেই যেন সাধারণ মানুষের অপছন্দের কেউ, যাদের অধিকাংশই বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজের সাথে জড়িত বা পৃষ্ঠপোষক।

অর্থ-প্রতিপত্তি, উপর মহলের সাথে যোগাযোগ প্রভৃতির মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্ধারিত হয় বলে অনেকেই মনে করেন। নেতৃত্ব নির্ধারণে গণতান্ত্রিক প্রথা অবলম্বন করা হয় না বললেই চলে। তাই ত্যাগী, যোগ্য ব্যক্তিদের নেতৃত্বে আসা দুঃস্বপ্নই থেকে যায়। যার ফল ভোগ করতে হয় সাধারণ কর্মী সমর্থকদের। ক্ষতিগ্রস্ত হয় দলীয় ভাবমূর্তি। এমন চলমান রাজনৈতিক সংস্কৃতির মাঝেও তদন্ত সাপেক্ষে বিএনপির জেলা কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটি গঠনের যে সিদ্ধান্ত নীতিনির্ধারক মহল নিয়েছে তাতে রাজনৈতিক বিশ্লেষকগণ আশাবাদী হয়ে উঠেছেন।

চমক যেন হয় দেশপ্রেমের – ফরিদ আহমেদ রবি

পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে রাজনীতি একটি আদর্শ ভিত্তিক অবস্থানের ইংগিত দিচ্ছে ভেবেই এমন আশাবাদী হওয়া। দলীয় শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এমন ভূমিকা অব্যাহত থাকলে তা অন্যান্য দলের জন্যও অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হিসেবে চিহ্নিত হবে। রাজনৈতিক এমন চমক নিঃসন্দেহে ইতিবাচক হিসেবেই সবার কাছেই সমাদৃত হবে। দেশের প্রধান দুটি দলের ক্ষমতায় থাকা এবং বিরোধী দলীয় অবস্থান জাতি প্রত্যক্ষ করেছে। দেশে প্রকৃত গণতন্ত্র কখনই ছিল না। এর অন্যতম প্রধান কারণ দলের ভিতর গণতান্ত্রিক চর্চার অভাব। দলে গণতান্ত্রিক চর্চা থাকলে সদ্য বিদায়ী দলটির এমন পরিণতি হতো না। দেশের প্রধান দুটি দলের একটি হয়েও দলটি আজ অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে। নারায়ণগঞ্জে দলটি শক্ত অবস্থানে আছে বলে এতদিন প্রচারিত হলেও দলটির সাংগঠনিক ভিত্তি কতটা দুর্বল ছিল তা এখন পরিষ্কার বুঝা যাচ্ছে।

কর্তৃত্ববাদী গুটি কয়েক স্বার্থপর নেতার হাতেই সংগঠনটি জিম্মি ছিল। তার প্রমাণ সেসব ডাকসাইটে নেতাদের কেউ আর নারায়ণগঞ্জে নেই। অসংখ্য কর্মী সমর্থক অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। দীর্ঘদিন শীর্ষ পদ আঁকড়ে থাকা অনেক নেতাই গর্ব করে বলতো তাদের কোন প্রতিদ্বন্দ্বী নেই, তারা জনপ্রিয়, তাই দীর্ঘদিন একই পদে থাকা। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নেতৃত্ব নির্বাচিত হলে এ অবস্থা কখনোই হতো না। জনভিত্তি এবং সততা থাকলে এসব নেতাদের বিদেশে পালাতে হতো না বা আত্মগোপনে চলে যেতে হতো না। ক্ষমতার দম্ভে তারা সাধারণ মানুষের মনের কথা বুঝতে পারতো না বা বুঝতে চাইতোনা বলেই আজ দলটির এমন পরিণতি। দলে গণতন্ত্র থাকলে যে কোনভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকার এমন মানসিকতা বা প্রবণতা থাকতো না বলেও সচেতন মহলের অভিমত।

নারায়ণগঞ্জে রাজনৈতিক চমক মানেই ক্ষমতাসীন দলের নেতৃবৃন্দের সণ্ত্রাসী কর্মকান্ডে মদত দেয়া, চাঁদাবাজি টেন্ডারবাজি দখলদারিত্ব সহ সব ধরনের অনৈতিক কাজে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে জড়িত থাকা। সাধারণ মানুষের চাওয়া পাওয়া নিয়ে তাদের সামান্যতম মাথাব্যথা থাকেনা, থাকে শুধু বাগাড়াম্বর, দম্ভোক্তি, কথার ফুলঝুরিতে উন্নয়নের জোয়ার বইয়ে দেয়া। প্রশাসন থাকে হাতের মুঠোয়, তাদের কথাই হয়ে যায় আইন। এমন রাজনৈতিক চমক আর দেখতে চায় না নারায়ণগঞ্জবাসী, দেখতে চায় দেশপ্রেম আর জনকল্যাণমূলক চমক। এজন্য প্রয়োজন রাজনৈতিক দলে দেশ ও জনদরদী নেতৃত্ব, দলের ভিতর গণতন্ত্র চর্চা।

চমক যেন হয় দেশপ্রেমের – ফরিদ আহমেদ রবি

উল্লেখিত সমস্যা সমূহ সারাদেশেই কমবেশি বিদ্যমান হলেও নারায়ণগঞ্জবাসীর মত বন্দীদশা খুব কম অঞ্চলেই দেখা যায়। অপরাজনীতির অভিশাপে অভিশপ্ত নারায়ণগঞ্জবাসী এমন অবস্থা থেকে মুক্তি চায়। দলীয় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে বিএনপি যে পদক্ষেপ নিয়েছে তা যেন অব্যাহত থাকে, অন্যান্য দলগুলোও যেন দলে গণতন্ত্র এবং শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সচেষ্ট হয় এই প্রত্যাশা প্রতিটি দেশপ্রেমিক নাগরিকের। দেশ পরিচালনায় রাজনীতির বিকল্প নেই। দলে গণতন্ত্রের চর্চা থাকলে দেশ পরিচালনায় তার প্রভাব পড়বেই। তাই রাজনৈতিক দল সমূহের মধ্যে প্রয়োজনীয় সংষ্কার সাধন সময়ের দাবি। নয়তো দেশকে বারবার পিছিয়ে যেতে হবে, গণতন্ত্র থাকবে অধরা। রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের মাধ্যমে যে পরিবর্তন সূচিত হয়েছে তার ফল পুরোপুরি ভোগ করতে হলে রাজনৈতিক সংষ্কারের বিকল্প নেই।

বর্তমান প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক দল সমূহের মধ্যে সংষ্কার সাধিত হলে তা হবে শ্রেষ্ঠ চমক যাতে প্রতিফলিত হবে দেশপ্রেম, জনগণের প্রতি দায়িত্ববোধ, দলে গণতন্ত্রের চর্চা। এমন প্রত্যাশা পূরণ যত তাড়াতাড়ি হবে ততই মঙ্গল দেশ ও জাতির।

লেখক: বহুজাতিক ওষুধ কোম্পানি ও পোশাক শিল্পের সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তা

চমক যেন হয় দেশপ্রেমের – ফরিদ আহমেদ রবি

আরও পরুনঃ রাসূলের দেখানো পদ্ধতি মানতে পারলেই প্রকৃত সফলতা – মাওলানা মঈনুউদ্দিন আহমদ

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগসঃ

চমক যেন হয় দেশপ্রেমের – ফরিদ আহমেদ রবি

আপডেটঃ ০৯:৩৮:৫৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ জানুয়ারী ২০২৫

চমক যেন হয় দেশপ্রেমের – ফরিদ আহমেদ রবি

চমকের রাজনীতি আর রাজনীতির চমকে দেশবাসী বার বার চমকিত হয়েছে। এখনও চমকের ধারা অব্যাহত রয়েছে। রাজনৈতিক চমক সৃষ্টিতে নারায়ণগঞ্জ সবসময় শীর্ষে অবস্থান করে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে চমকের অধিকাংশই হয় নেতিবাচক।

চমক নিয়ে আসছে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির নতুন কমিটি“- শিরোনামে প্রকাশিত একটি সংবাদ সম্প্রতি নজরে আসলো। সংবাদ প্রতিবেদনে শীর্ষ পদের সম্ভাব্য নেতাদের সম্ভাবনা নিয়ে আলোকপাত করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে জেলা কমিটি বাতিল হওয়ায় নতুন কমিটি গঠিত হবে এটাই স্বাভাবিক। সংগত কারনেই পদপ্রার্থী নেতাদের দৌড় ঝাঁপ শুরু হবে, তাও খুবই স্বাভাবিক। কোন অভিযোগের ভিত্তিতে কমিটি বাতিল হয়েছে তা প্রকাশ হোক বা না হোক তাতে কিছু আসে যায় না। তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটি গঠনের যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে সেটিই গুরুত্বপূর্ণ।

এমন প্রক্রিয়া রাজনৈতিক দলের ভিতর গণতন্ত্র চর্চার প্রকৃষ্ট দৃষ্টান্ত হিসেবে চিহ্নিত হবে যদি তা সত্যিকার অর্থেই দলীয় গণতন্ত্রের স্বার্থে হয়ে থাকে, যদি তা অব্যাহত থাকে। এমন আদর্শ ভিত্তিক অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত সৃষ্টির জন্য বিএনপির নীতিনির্ধারক মহল নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবি রাখে। দলীয় কমিটির নেতা মানেই যেন পেশীশক্তির অধিকারী অর্থ বিত্তশালী কোন ব্যক্তির প্রতিচ্ছবি। জনভিত্তি,আদর্শ, শিক্ষা, নেতা হওয়ার ক্ষেত্রে কোন প্রভাব ফেলে না। তাইতো নারায়ণগঞ্জে রাজনৈতিক দলের নেতা মানেই যেন সাধারণ মানুষের অপছন্দের কেউ, যাদের অধিকাংশই বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজের সাথে জড়িত বা পৃষ্ঠপোষক।

অর্থ-প্রতিপত্তি, উপর মহলের সাথে যোগাযোগ প্রভৃতির মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্ধারিত হয় বলে অনেকেই মনে করেন। নেতৃত্ব নির্ধারণে গণতান্ত্রিক প্রথা অবলম্বন করা হয় না বললেই চলে। তাই ত্যাগী, যোগ্য ব্যক্তিদের নেতৃত্বে আসা দুঃস্বপ্নই থেকে যায়। যার ফল ভোগ করতে হয় সাধারণ কর্মী সমর্থকদের। ক্ষতিগ্রস্ত হয় দলীয় ভাবমূর্তি। এমন চলমান রাজনৈতিক সংস্কৃতির মাঝেও তদন্ত সাপেক্ষে বিএনপির জেলা কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটি গঠনের যে সিদ্ধান্ত নীতিনির্ধারক মহল নিয়েছে তাতে রাজনৈতিক বিশ্লেষকগণ আশাবাদী হয়ে উঠেছেন।

চমক যেন হয় দেশপ্রেমের – ফরিদ আহমেদ রবি

পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে রাজনীতি একটি আদর্শ ভিত্তিক অবস্থানের ইংগিত দিচ্ছে ভেবেই এমন আশাবাদী হওয়া। দলীয় শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এমন ভূমিকা অব্যাহত থাকলে তা অন্যান্য দলের জন্যও অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হিসেবে চিহ্নিত হবে। রাজনৈতিক এমন চমক নিঃসন্দেহে ইতিবাচক হিসেবেই সবার কাছেই সমাদৃত হবে। দেশের প্রধান দুটি দলের ক্ষমতায় থাকা এবং বিরোধী দলীয় অবস্থান জাতি প্রত্যক্ষ করেছে। দেশে প্রকৃত গণতন্ত্র কখনই ছিল না। এর অন্যতম প্রধান কারণ দলের ভিতর গণতান্ত্রিক চর্চার অভাব। দলে গণতান্ত্রিক চর্চা থাকলে সদ্য বিদায়ী দলটির এমন পরিণতি হতো না। দেশের প্রধান দুটি দলের একটি হয়েও দলটি আজ অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে। নারায়ণগঞ্জে দলটি শক্ত অবস্থানে আছে বলে এতদিন প্রচারিত হলেও দলটির সাংগঠনিক ভিত্তি কতটা দুর্বল ছিল তা এখন পরিষ্কার বুঝা যাচ্ছে।

কর্তৃত্ববাদী গুটি কয়েক স্বার্থপর নেতার হাতেই সংগঠনটি জিম্মি ছিল। তার প্রমাণ সেসব ডাকসাইটে নেতাদের কেউ আর নারায়ণগঞ্জে নেই। অসংখ্য কর্মী সমর্থক অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। দীর্ঘদিন শীর্ষ পদ আঁকড়ে থাকা অনেক নেতাই গর্ব করে বলতো তাদের কোন প্রতিদ্বন্দ্বী নেই, তারা জনপ্রিয়, তাই দীর্ঘদিন একই পদে থাকা। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নেতৃত্ব নির্বাচিত হলে এ অবস্থা কখনোই হতো না। জনভিত্তি এবং সততা থাকলে এসব নেতাদের বিদেশে পালাতে হতো না বা আত্মগোপনে চলে যেতে হতো না। ক্ষমতার দম্ভে তারা সাধারণ মানুষের মনের কথা বুঝতে পারতো না বা বুঝতে চাইতোনা বলেই আজ দলটির এমন পরিণতি। দলে গণতন্ত্র থাকলে যে কোনভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকার এমন মানসিকতা বা প্রবণতা থাকতো না বলেও সচেতন মহলের অভিমত।

নারায়ণগঞ্জে রাজনৈতিক চমক মানেই ক্ষমতাসীন দলের নেতৃবৃন্দের সণ্ত্রাসী কর্মকান্ডে মদত দেয়া, চাঁদাবাজি টেন্ডারবাজি দখলদারিত্ব সহ সব ধরনের অনৈতিক কাজে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে জড়িত থাকা। সাধারণ মানুষের চাওয়া পাওয়া নিয়ে তাদের সামান্যতম মাথাব্যথা থাকেনা, থাকে শুধু বাগাড়াম্বর, দম্ভোক্তি, কথার ফুলঝুরিতে উন্নয়নের জোয়ার বইয়ে দেয়া। প্রশাসন থাকে হাতের মুঠোয়, তাদের কথাই হয়ে যায় আইন। এমন রাজনৈতিক চমক আর দেখতে চায় না নারায়ণগঞ্জবাসী, দেখতে চায় দেশপ্রেম আর জনকল্যাণমূলক চমক। এজন্য প্রয়োজন রাজনৈতিক দলে দেশ ও জনদরদী নেতৃত্ব, দলের ভিতর গণতন্ত্র চর্চা।

চমক যেন হয় দেশপ্রেমের – ফরিদ আহমেদ রবি

উল্লেখিত সমস্যা সমূহ সারাদেশেই কমবেশি বিদ্যমান হলেও নারায়ণগঞ্জবাসীর মত বন্দীদশা খুব কম অঞ্চলেই দেখা যায়। অপরাজনীতির অভিশাপে অভিশপ্ত নারায়ণগঞ্জবাসী এমন অবস্থা থেকে মুক্তি চায়। দলীয় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে বিএনপি যে পদক্ষেপ নিয়েছে তা যেন অব্যাহত থাকে, অন্যান্য দলগুলোও যেন দলে গণতন্ত্র এবং শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সচেষ্ট হয় এই প্রত্যাশা প্রতিটি দেশপ্রেমিক নাগরিকের। দেশ পরিচালনায় রাজনীতির বিকল্প নেই। দলে গণতন্ত্রের চর্চা থাকলে দেশ পরিচালনায় তার প্রভাব পড়বেই। তাই রাজনৈতিক দল সমূহের মধ্যে প্রয়োজনীয় সংষ্কার সাধন সময়ের দাবি। নয়তো দেশকে বারবার পিছিয়ে যেতে হবে, গণতন্ত্র থাকবে অধরা। রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের মাধ্যমে যে পরিবর্তন সূচিত হয়েছে তার ফল পুরোপুরি ভোগ করতে হলে রাজনৈতিক সংষ্কারের বিকল্প নেই।

বর্তমান প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক দল সমূহের মধ্যে সংষ্কার সাধিত হলে তা হবে শ্রেষ্ঠ চমক যাতে প্রতিফলিত হবে দেশপ্রেম, জনগণের প্রতি দায়িত্ববোধ, দলে গণতন্ত্রের চর্চা। এমন প্রত্যাশা পূরণ যত তাড়াতাড়ি হবে ততই মঙ্গল দেশ ও জাতির।

লেখক: বহুজাতিক ওষুধ কোম্পানি ও পোশাক শিল্পের সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তা

চমক যেন হয় দেশপ্রেমের – ফরিদ আহমেদ রবি

আরও পরুনঃ রাসূলের দেখানো পদ্ধতি মানতে পারলেই প্রকৃত সফলতা – মাওলানা মঈনুউদ্দিন আহমদ