চাটখিলে স্বামীর মৃত্যুর পর ডিপোজিটের টাকা নিয়ে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ ২য় স্ত্রীর বিরুদ্ধে
মোঃ মাসুদ রানা, নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ
নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলায় স্বামীর মৃত্যুর পর সম্পত্তি ভোগদখল ও ডিপোজিটের টাকা নিয়ে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ উঠেছে ২য় স্ত্রী ও তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়,পরকোট ইউনিয়নের উত্তর রামদেবপুর ভূইয়া বাড়ির মরহুম ফারুক মেম্বারের ২য় স্ত্রী ও শ্যালক মিজানুর রহমান রতন ১ম স্ত্রীর সন্তানদের ওয়ারিশ থেকে বঞ্চিত করার নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।
ফারুক মেম্বার জীবিত থাকাকালে উপজেলার দশঘরিয়া বাজার শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকে দুটি এফডিআর খোলেন বলে তার ১ম পক্ষের স্ত্রী সন্তানেরা দাবী করছেন।
তারা বলেন, ৩ লক্ষ টাকা করে এককালীন জমা দেওয়া এসব এফডিআর এ এককালীন ৯ লাখ টাকা পরিশোধ করবে ব্যাংক। শাহ জালাল ইসলামী ব্যাংক দশঘরিয়া শাখার একটি বিবরণী সূত্রে ও এমন তথ্য পাওয়া গেছে। যা ইতিমধ্যে এ প্রতিবেদকের হাতে এসে পৌঁছেছে। বিবরণীতে দেখা যায় ২০৩১ সালের ২৯ শে জানুয়ারি ফারুক আহমেদ ভূঁইয়ার করা ডিপোজিট এর মেয়াদ শেষ হবে। মেয়াদ শেষে তিনি একটি এফডিআরের জন্য ৯ লক্ষ টাকা করে এককালীন পাবেন।
ফারুক মেম্বরের ১ম পক্ষের সন্তানেরা জানান, তাদের বাবার রেখে যাওয়া ১২ শতাংশ সম্পত্তির মধ্যে ১০ শতাংশ-ই ভোগ দখল করছে দ্বিতীয় স্ত্রী আয়েশা আক্তার। আয়েশাকে এসব কাজে সহযোগিতা করছে তার ভাই মিজানুর রহমান রতন।
প্রাপ্ত অভিযোগে আরও জানা যায়,উত্তর রামদেবপুর ভূইয়া বাড়ির ফারুক মেম্বার ছিলেন দশঘরিয়া বাজারের চমক মিষ্টি ঘরের মালিক। ফারুক মেম্বার ২টি বিয়ে করেন। ১ম স্ত্রী’র ঘরে ২ ছেলে ১ মেয়ে সন্তান রয়েছে। পরে তিনি আয়েশা আক্তার নামে আরেক নারীকে ২য় বিয়ে করেন। ২য় বিয়ে করার পর থেকে ১৭ বছর পর্যন্ত ১ম স্ত্রীকে তার স্বামীর সংস্পর্শে আসতে দেয়নি ফারুকের ২য় বউ।
ফারুক মেম্বরের মৃত্যুর পর তার ১ম ঘরের স্ত্রী, সন্তানদের কোনো হিসাব নিকাশ না দিয়ে, ব্যবসা-বাণিজ্যের দায়িত্বে বুঝে নেয় তার দ্বিতীয় স্ত্রী আয়েশা আক্তার ও তার ভাই রতন। ফারুক মেম্বারের প্রথম ঘরের স্ত্রী সন্তানদের ওয়ারিশ থেকে বঞ্চিত করার জন্য তারা শুরু করে নানা রকম ষড়যন্ত্র।
এ বিষয়ে দৈনিক নয়া বঙ্গবাজার নামক একটি পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে ফারুক মেম্বারের ২য় স্ত্রী আয়েশা আক্তার ও তার ভাই রতন।রতন ১৪ জন লোক নিয়ে দশঘরিয়া বাজারে পত্রিকাটির সম্পাদক নুর আলমের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করে।
এলাকাবাসী এ মানববন্ধনকে তামাশা বলে আখ্যায়িত করে।
এই ব্যাপারে জানতে চাইলে মৃত ফারুক মেম্বারের শ্যালক মিজানুর রহমান রতন বলেন, ব্যাংকে ৬ লক্ষ টাকার ২টি ডিপোজিট নয়, ৩ লক্ষ টাকার একটি ডিপোজিট রয়েছে, এটা আমার বোনের নামে। ব্যাংকের দেওয়া তথ্যমতে ফারুক মেম্বরের নামে ডিপোজিট এর ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, তাহলে যাকে নমিনি দেয়া হয়েছে তিনি এ টাকা পাবেন। আর বিষয়টা সম্পূর্ণ ব্যাংকের। ১০ শতাংশ জায়গা ভোগদখল সম্পর্কে জানতে চাইলে রতন বলেন ১০ শতাংশ নয়। ৯ শতাংশ থেকে একটু কম। এগুলো আমরা ফারুক মেম্বর থেকে টাকা দিয়ে কিনে নিয়েছি। আমাদের নামে রেজিস্ট্রি না করে আমার বোনের নামে হেবা করেছি। কাগজপত্রে দেখা যায় ৩.৭৩ শতাংশ জায়গা আয়েশা আক্তার শেলীর নামে ফারুক আহমেদ ভুঁইয়া বিগত ২৬/৯/২০১১ ইং তাং হেবা দলিল করে দেয়। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন এটা সঠিক নয়।
এদিকে মরহুম ফারুক মেম্বরের বড় ছেলে সুমণ ভুঁইয়া এ প্রতিবেদককে বলেন, আমরা হেবা দলিল বাতিলের জন্য মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। তিনি বলেন তাছাড়া ব্যাংকের ডিপোজিটের টাকা যাতে ওয়ারিশদের মাঝে সমান বন্টন হয় সেই ব্যাপারে আমরা আদালতের শরণাপন্ন হবো।
এছাড়াও ফারুক মেম্বারের রেখে যাওয়া ব্যাংক ডিপোজিট ও সম্পত্তি সঠিকভাবে তার উভয় ঘরের স্ত্রী সন্তানদের মাঝে, ইসলামী শরীয়া মোতাবেক বন্টনের ব্যবস্থা করার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে ১ম ঘরের স্ত্রী সন্তানেরা।