জমিজমার বিরোধে একই পরিবারের ১০ জনকে কুপিয়ে জখম

এম, সাইদুর রহমান ক্রাইম রিপোর্টার:

পটুয়াখালীর বাউফলে জমিজমার বিরোধের জের ধরে পরিকল্পিত ভাবে একই পরিবারের ১০ জনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করার অভিযোগ পাওয়া গেছে পরী ঠাকুর ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। এসময় পরী ঠাকুর ও তার সহযোগীরা ভুক্তভোগীদের ঘর বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়।

গত (১৬ ফেব্রুয়ারি) বৃহস্পতিবার বিকেল আনুমানিক ৩ টার দিকে উপজেলার কনকদিয়া ইউনিয়নের (১নং ওয়ার্ড) জয়ঘোড়া গ্রামে নাপিত বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরে প্রতিবেশীরা আহতদের বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়।

আহতরা হলো, অভানি শীল ও তার স্ত্রী কমলারানী অভানিশীলের ছেলে অমৃতশীল, নয়নশীল,অরুন শীল ও অরুণ শীলের ছয় মাসের শিশু কন্যা তনুশ্রী, অজয় শীল, নারায়ন শীল এবং সরস্বতী। এদের মধ্যে গুরুতর অমৃত, অরুণ ও নয়নকে গুরুতর অবস্থায় বরিশাল শেরে-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে এবং অন্যান্যরা বাউফলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

আহত অরুণশীল জানান, দীর্ঘদিন ধরে জমি জমা নিয়ে অভানি শীল ও তার পরিবারদের সাথে প্রতিবেশী মৃত ধীরেন চন্দ্র ঠাকুরের ছেলে পরী ঠাকুর ও তার পরিবারদের বিরোধ চলে আসছে।অবাণী শীলের জমি জোরপূর্বক জবরদখল করার চেষ্টা চালায় পরী ঠাকুর ও তার সহযোগীরা। তবে,বিরোধপূর্ণ জমি নিয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে।

অভিযোগ সুত্রে যানা যায়, ঘটনার দিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার বিকেলে অভানী শিল ও তার মেজো ভাই নারায়ণ তাদের রান্নাঘরের চাল দিতে শুরু করলে প্রতিপক্ষ পরী ঠাকুর ও তার লোকজন বাধা দেয়।এতে প্রতিবাদ করলে পরি ও তাদের সহযোগী মিলন, শ্যামল, কালাচান,মনোতোষ, পুতুল, আকুল, শেফালী, পারুল, কার্তিক সহ অজ্ঞাত কয়েকজন পরিকল্পিতভাবে অবানীর উপর ক্ষিপ্ত হয়ে লাঠিসোঁটা ও দা দিয়ে আতর্কিত নৃশংস হামলা চালায়। কিন্তু,পর্যায়ক্রমে তাদের পরিবারের অমৃতশীল, অরুন শীল, নয়ন শীল, অজয় শীল, চয়নশীল, নারায়ণ, সরস্বতী, কমলা রানী ও ছয় মাসের শিশু তনুশ্রীকে পিটিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করেন পরীসহ অন্যান্য সহযোগীরা।

এদিকে ঘটনা ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করতে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে হামলাকারী পরী ও মনতোষ নাটকীয় কায়দায় বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়।

আহত কমলা রানী জানান, পরী ঠাকুর ও তার লোকজন এর পূর্বেও আমাদের উপর হামলা চালিয়েছে।ওদের সন্ত্রাসী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আমরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

এ ঘটনায় জয়ঘোড়া ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মাহাবুব হাওলাদার বলেন, ঘটনার দিন আমি ব্যাক্তিগত কাজে মমিনপুর ছিলাম। ঘটনা শোনার পরে গ্রাম পুলিশ ফিরোজ আলমকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। কিন্তু পরী ঠাকুর ও তার সহযোগীরা পরিকল্পিত ভাবে এরূপ সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ঘটনা করেছে। গ্রাম পুলিশ ফিরোজ আলমের কোন কথা তাঁরা তোয়াক্কা করে নাই।

গ্রাম পুলিশ ফিরোজ আলম বলেন, পরিষদ থেকে ঘটনাস্থলে যাওয়ার জন্য ফোন আসলে আমি সেখানে যাই এবং পরী ঠাকুর ও তার সহযোগীদের ঝগড়া না করার জন্য নিষেধ করলে আমার সামনেই তাঁরা (পরী ঠাকুর ও তাদের সহযোগীরা) কোন কথা তোয়াক্কা না করেই মারামারি শুরু করে।

এ বিষয় বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল-মামুন বলেন, মারামারি ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মতামত জানান