বাউফল প্রতিনিধিঃটুয়াখালীর বাউফলে দাশপাড়া ইউনিয়নে ২০১৯-২০ অর্থবছরে গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন কর্মসূচী (কাবিখা) এর পাঁচটি প্রকল্পের ৫৭.০০ মেট্রিক্স টন সরকারি চাল ও গম কোন কাজ না করেই আত্মসাত করার অভিযোগে তিনটি প্রকল্পের সভাপতি ও একটির সাধারণ সম্পাদক দাশপাড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য আতিকুর রহমান মোহন, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (ত্রান শাখা) রাজিব বিশ্বাস সহ সাত জনের বিরুদ্ধে দুদক মামলা দায়ের করেছেন। সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) দুদকের সমন্বিত পটুয়াখালী জেলা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মো. আরিফ হোসেনের আবেদনের প্রেক্ষিতে মামলাটি এজাহার করা হয়। পেনাল কোডের ৪০৯/১০৯ ধারা তৎসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় মামলাটি রুজু করা হয়েছে।
মামলায় অন্য আসামীরা হলেন দাশপাড়া ইউনিয়নের বাদিন্দা আবুল বাশার, আমির হোসেন প্যাদা, হুমায়ন কবির ও মামুন মৃধা। এরা সকলে আলাদা ভাবে এই ৫ টি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য ছিলেন।
মামলার এলাকার সূত্রে জানা যায়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাউফল উপজেলাধীন ১১ নং দাশপাড়া ইউনিয়নে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার কর্মসূচীর আওতায় দাশপাড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে ৫ টি প্রকল্পের জন্য ২৭ মে. টন চাল ও ৩০ মে. টন গম বরাদ্দ দেয়া হয়। যার বাজার মূল্য ২১২৬২৯২ টাকা। এই ৫ টি প্রকল্পের মধ্যে প্রথম পর্যায়ে ৩ টি প্রকল্পের বিপরীতে যথাক্রমে ৮+৯+১০ সর্বমোট ২৭ মে. টন চাল এবং ২য় পর্যায়ে ২ টি প্রকল্পের বিপরীতে যথাক্রমে ১৫+১৫ সর্বমোট ৩০ মে. টন গম বরাদ্দ দেয়া হয়েছিলো। কাজ না করেই বরাদ্দকৃত চাল ও গম উত্তোলন করে ফেলা হয়। এই বিষয়ে দাশপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পটুয়াখালী আদালতে একটি নালিশী অভিযোগ করেন। যার পরিপেক্ষিতে উক্ত প্রকল্পে কোন কাজ না করেই আসামীগণ পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণামূলক বিশ্বাসভঙ্গের মাধ্যমে চাল ও গম উত্তোলন পূর্বক আত্মসাত করায় বিজ্ঞ আদালতে পিটিশন নং ০২/২০২০ দায়ের করা হয়। যা বিজ্ঞ আদালতের স্মারক নং ২৭০৭, তারিখ ১৯/১১/২০২০ খ্রি. মূলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দুদক বরাবর প্রেরণ করা হয়। অতঃপর দুদক সজেকা, পটুয়াখালীর স্মারক নং ১২০৩ (১৯/১২/২০২১) মূলে দুদকে পটুয়াখালী জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মো. আরিফ হোসেনকে মামলা রুজু করার নির্দেশ দেয়া হয়।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সমন্বিত জেলা কার্যালয়, পটুয়াখালীর উপপরিচালক মো. ওয়াজেদ আলী গাজী এ বিষয়ে বক্তব্য দিতে রাজি হননি।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সমন্বিত জেলা কার্যালয়, পটুয়াখালীর উপসহকারী পরিচালক মো. আরিফ হোসেন বলেন, মামলার এজাহার রুজু করা হয়। মামলাটি দুদকের প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে৷ প্রধান কার্যালয় থেকে তদন্ত প্রতিবেদনের জন্য তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হবে।
মামলার প্রধান আসামী ৩ টি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ও ১ টির সাধারণ সম্পাদক যুবলীগ নেতা আতিকুর রহমান মোহন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সকল রাস্তার কাজ সঠিক ভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রাজিব বিশ্বাস বলেন, অভিযোগটি সঠিক নয়। সকল কাজ সঠিক ভাবে সম্পন্ন হয়েছে। প্রয়োজনে সরেজমিন তদন্ত করে দেখতে পারেন।
উল্লেখ্য, এই প্রকল্প গুলোতে কাজ না করে চাল ও গম উত্তোলন পূর্বক আত্মসাত করার বিষয়ে ২০২০ সালে পর্যবেক্ষণ অনলাইন, প্রথম আলো, জনকণ্ঠ সহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছিলো।