বাউফলে বিধবা শিক্ষিকার বাসায় তালাবদ্ধ করে চাঁদা দাবি, ৯৯৯- ফোন পেয়ে পুলিশ উদ্ধার করে
পটুয়াখালীর বাউফলে পূর্ব শত্রুতার জের ও জমি সংক্রান্ত বিষয়কে কেন্দ্র করে খাদিজা বেগম (৪০) নামের এক শিক্ষিকার বসত ঘরে তালাবদ্ধ করে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন প্রতিপক্ষরা।
গেল শুক্রবার (১ই জানুয়ারি) সকাল ৯ টার দিকে উপজেলার কালিশুরী ইউনিয়নের কালিশুরী বাজারের দক্ষিণ রোডের পূর্ব পাশে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনাস্থলের সুত্র থেকে যানা যায়,’ শিক্ষিকা খাদিজা ১৩৭ নং দক্ষিণ পোনাহুড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। শিক্ষিকা খাদিজা বেগম প্রতিদিনের মতোই স্কুলে রওনা দেয়।খাদিজার বাসা কালিশুরী বাজারের দক্ষিণ দিকের মেইন রাস্তার সাথেই।খাদিজা বেগম বাসা থেকে বের হওয়ার সময় আঃ খালেক (৬০), নজরুল ইসলাম (৫৫) ও মেহেদী হাসান (৪০) তিনজন বসত ঘরের সামনে এসেই হুমকি দিয়ে বলে ‘২০ লাখ টাকা দিবি নয়তো ঘর থেকে বের হবি’ আজকে টাকা না দিলে তোদের ঘর থেকে বের হতে দেব না,দোকানে তালা লাগিয়েছি। এই জমি আমরা কিনেছি, এখন থেকে এই জমির মালিক আমরা। শিক্ষিকা খাদিজা তাদের বলল, আমি এখন স্কুলে যাবো, স্কুলের সময় হয়ে গেছে। আপনারা কিভাবে আমার স্বামীর ক্রয়কৃত জমি কিনলেন! আমরা ২৩ বছর আগ থেকেই এই জমিতে বসতবাড়ি করে আছি।আপনারা কিভাবে এই জমি ক্রয় করলেন।
এক পর্যায় কথা কাটাকাটির মূহুর্তে ঠিকই শিক্ষিকা খাদিজা বেগম ও তার ভাড়াটিয়াদেরসহ সবাইকে তালা বদ্ধ করে দেয় আঃ খালেক, নজরুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান। দিকবিদিকশুন্য হয়ে খাদিজা বেগম শেষমেশ কাউকে না পেয়ে ৯৯৯-এ ফোন দিলে বাউফল থানা থেকে পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার করে।পরবর্তীতে এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে সাংবাদিকরাসহ অনেক লোকজন জড়ো হয়।পরে পুলিশ দু’পক্ষের জমি সংক্রান্ত বিষয় শোনার পরে তাদেরকে কাগজপত্র নিয়ে বিকালে থানায় যেতে বলে। তবে, খাদিজা বেগম তার কাগজ পত্র নিয়ে থানায় গেলেও খালেক, নজরুল ও মেহেদী হাসান তারা থানায় উপস্থিত হয়নি।
শিক্ষিকা খাদিজা বেগম সাংবাদিকদের বলেন,’ আমাদের এই বসতবাড়ির জমি দীর্ঘ ২৩ বছর আগে কিনেছি। আমার স্বামী গেল ৮ মাস আগে রোগক্রান্ত হয়ে মারা যায়। আমি নিঃস্বন্তান।আমার কোন সন্তান নেই।আর আঃখালেক, নজরুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান তারা এই জমি কিনেছে ৬ মাস আগে। এর আগেও তারা কয়েকবার ঝামেলা করেছে। আমি বাউফল থানায় ও পটুয়াখালী আদালতে অভিযোগও করেছি।পটুয়াখালী আদালতে জমি সংক্রান্ত বিষয়ে মামলা এখনও চলমান আছে। আর আমি আজকে বছরের প্রথম দিনে স্কুলে বই বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারিনি। আমি উপজেলা শিক্ষা অফিসার রিয়াজুল স্যারকেও এ বিষয়ে জানিয়েছি।তবে,আমাকে বিনা কারনে কেন আমার বসতঘরে তালাবদ্ধ করে চাঁদা দাবি করেছে সেই বিষয় আমি আপনাদের মাধ্যমে প্রশাসনের কাচে বিচার দাবি জানাচ্ছি।
আঃখালেক ও নজরুলের সাথে কথা হলে তারা বলেন,’ এই জমি আমরা ৬ মাস আগে কিনেছি। এখানে ১৪ শতাংশ জমি।তাছাড়া এই জমির মূল মালিক কুদ্দুস রহমান। কুদ্দুস আমাদের ওয়ারিশ। সেই সুত্রে আমরা এই জমি কিনেছি।৬ মাস আগে জমির দলিল হয়েছে। সেই সুত্রে আমরা জমি দখলে এসেছি। আমরা কোন চাঁদা দাবি করিনি। এটা খাদিজা মিথ্যা কথা বলেছে।
এ বিষয় বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আল-মামুনের সাথে কথা হলে তিনি সাংবাদিকের বলেন,’ খাদিজা বেগম নামের এক শিক্ষিকাকে তালাবদ্ধ করে রেখেছে এমনই তথ্য ৯৯৯-এর মাধ্যমে জানতে পেরে তৎক্ষানীক ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে ঐ শিক্ষিকাকে উদ্ধার করা হয়।