বাউফলে শেখ হাসিনা ও রেহেনা কে বঙ্গবন্ধুর দুই সহধর্মিণী হিসেবে পরিচয় দেয় চালক লীগের সভাপতি জলিল

বাউফলে শেখ হাসিনা ও রেহেনা কে বঙ্গবন্ধুর দুই সহধর্মিণী হিসেবে পরিচয় দেয় চালক লীগের সভাপতি

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় একটি সংগঠনের নাম মোটর চালকলীগ। সংগঠনটির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত হয় ২৮ জানুয়ারি। বাউফলে সম্প্রতি মোটর চালকলীগ উপজেলা শাখার সভাপতি জলিল হাওলাদারের একটি বক্তব্যের ভিডিও গত দুইদিন যাবত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল। এটি মোটর চালকলীগের কোন এক প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর ভিডিও। সেই ভিডিওতে বক্তব্যের একপর্যায়ে জলিল হাওলাদারকে বলতে শোনা যায় ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহেনা বঙ্গবন্ধুর দুই সহধর্মিণী। ‘ তৎক্ষণাৎ পাশ থেকে শিখিয়ে দিলে তিনি বলেন কন্যা। এরকম লজ্জ্বাজনক কথা বলার পরেও সে বক্তব্য চালিয়ে যায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিও নিয়ে বাউফলে আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীদের ভিতরে চলছে আলোচনা, সমালোচনার ঝড়।

বাউফল উপজেলা আওয়ামীলীগের কার্যালয় জনতা ভবনে অনুষ্ঠিত মোটর চালকলীগের ওই প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া পান্নু, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি শাহজাহান সিরাজ, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও কালাইয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফয়সাল আহম্মেদ মনির মোল্লা, উপজেলা সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি হারুন অর রশিদ খান সহ উপজেলা আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।

মোটর চালকলীগ বাউফল উপজেলা সভাপতি আব্দুল জলিল হাওলাদারের বক্তব্যের পুরো ভিডিও এসেছে দৈনিক পর্যবেক্ষণের কাছে। ওই ভিডিওতে জলিল হাওলাদারকে আরো বলতে শোনা যায়, ‘ মোটর চলকলীগের প্রতিষ্ঠাতা সয়ং জননেত্রী শেখ হাসিনা। আ স ম ফিরোজ এমপি বলেছেন আমি তোমাকে(জলিল) পরিচয় করিয়ে দিয়ে যেতে পারি নাই। তবে তিঁনি(এমপি) — আব্দুল মোতালেব হাওলাদার (আওয়ামী সাধারণ সম্পাদক), মনির মোল্লা (যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক) ও মিজান মোল্লা (কালাইয়া ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি), পৌর আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দানকারী, উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতৃত্ব দানকারী সবাইকে বলেছে মোটর চালকলীগকে সু-সংগঠিত করার লক্ষে ২৮ জানুয়ারি (প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে) সবাইকে উপস্থিত থাকতে বলে দিয়েছেন। ‘
মোটর চালকলীগ উপজেলা শাখার এই সভাপতি উপজেলার কনকদিয়া ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ড জয়ঘোড়া এলাকার বাসিন্দা।

আওয়ামী দলীয় সূত্র জানায়, মোটর চালকলীগ নামে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কোন অঙ্গসংগঠন নেই। এটি একটি ভাইফোঁর সংগঠন। এদের কর্মকান্ডে বিব্রত বাউফল উপজেলা আওয়ামীলীগ। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বারবার এসব সংগঠনের বিরুদ্ধে বিবৃতি দিলেও থেমে নেই এদের কার্যক্রম।

এ বিষয় নিয়ে কথা বলতে জলিল হাওলাদারের মুঠোফোনে ফোন দিলে তিনি ফোন তোলেন নি।

এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও স্থানীয় এমপি আ স ম ফিরোজ বলেন, “আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় ভাবেতো কোন সিদ্ধান্ত আসে নাই (মোটর চালকলীগের বিষয়ে)। কমিটি করছে ওরা, আওয়ামীলীগের সাথে থাকতেছে, ঘুরতেছে এই আরকি।” সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওর বিষয়ে তিঁনি বলেন, “শ্রমিকতো শ্রমিক, এটা নিয়ে আলোচনা হয়? এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি নই, এটা কোন আলোচনার বিষয় হতে পারে না।” মোটর চালকলীগ সভাপতি জালিলের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে তিঁনি বলেন, “বিষয়টি আমার নলেজে কেউ দেয় নি এখনো। শুনি বিষয়টি, তারপরে আমি দেখবো।”

এ বিষয়ে পটুয়াখালী জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি কাজী আলমগীর বলেন, “আওয়ামীলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এবং আমাদের পার্টির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাহেব যেকয়টা অঙ্গসংগঠনের মর্যাদা দিছে এর বাইরে আমাদের কোন অঙ্গসংগঠন নেই।”

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মতামত জানান