দুমকিতে অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই শহীদ মিনার

- আপডেটঃ ০৫:৩৯:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
- / 34

দুমকিতে অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই শহীদ মিনার
রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের ৭৩ বছর পেরিয়ে গেলেও পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই শহীদ মিনার। প্রতি বছর ২১ ফেব্রুয়ারি এলেই কলাগাছ , কাঠ, বাঁশসহ বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে অস্হায়ী ভাবে শহীদ মিনার তৈরি করে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও শহীদ দিবস উপলক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
উপজেলা শিক্ষা ও মাধ্যমিক শিক্ষা দপ্তর সূত্রে জানা যায়, দুমকি উপজেলায় ৬০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ২৩টি মাদ্রাসা ও ৯টি কলেজ রয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই শহীদ মিনার। সরে জমিনে ঘুরে দেখা যায়, উপজেলায় ৬০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ২৬ টিতে, ২৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ১১টিতে, ২৩টি মাদ্রাসার মধ্যে ৩টিতে এবং ৯টি কলেজের মধ্যে মাত্র ৩টিতে শহীদ মিনার রয়েছে। যে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার আছে তাও রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচর্যার অভাবে অরক্ষিত অবস্থায় আছে।
উল্লেখ্য গত ১১মে ২০২৩খ্রি. মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউসি)’র এক পরিপত্রে বলা হয়, যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নাই তাদেরকে স্ব স্ব ব্যবস্থাপনায় অবিলম্বে শহীদ মিনার নির্মাণ করে ছবিসহ আঞ্চলিক উপ-পরিচালকের বরাবর পাঠানোর অনুরোধ জানানো হলেও প্রতিষ্ঠান প্রধানগণ আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে স্থায়ীভাবে শহীদ মিনার নির্মাণ করা সম্ভব হচ্ছে না বলে মন্তব্য করেন। বিগত বছরগুলোতে উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা পরিষদ চত্বরে অবস্থিত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে শ্রদ্ধা নিবেদন করায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শহীদ মিনার গুলো অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে আছে বলে সূধীজনরা মনে করেন।
দুমকিতে অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই শহীদ মিনার
বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানগণ জানান, প্রত্যেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শহীদ মিনার নির্মাণ করা হলে শিক্ষার্থীদের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও শহীদ দিবসের ইতিহাস সম্পর্কে অধিকতর জ্ঞান অর্জন করা সম্ভব হবে। সরকারের নির্দেশনা থাকলেও আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে স্থায়ীভাবে শহীদ মিনার নির্মাণ করা সম্ভব হচ্ছে না। উপজেলার কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এলাকার দানবীর ও সমাজসেবকদের মাধ্যমে স্থায়ীভাবে নির্মাণ করা হলেও অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই শহীদ মিনার। সেক্ষেত্রে উপজেলায় মোট ১১৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শহীদ মিনার আছে মাত্র ৪৩টিতে। এছাড়া প্রতিবছর অনেক বিদ্যালয়ের সাময়িকভাবে কলাগাছ, কাঠ ও বিভিন্ন ধরনের উপকরণ দিয়ে শহীদ মিনার তৈরি করে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে দেখা যায়।
উত্তর শ্রীরামপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ রফিকুল ইসলাম এব্যাপারে জানান, বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য কোন ফান্ড না থাকায় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সদয় দৃষ্টি কামনা করছি।
আজিজ আহমেদ কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ আহসানুল হক বলেন, এ বিষয়ে গভর্নিং বডির সভায় আলোচনা করা হয়েছে। পরবর্তীতে অর্থ প্রাপ্তি সাপেক্ষে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হবে।
উপজেলা স্কুল ও কলেজ শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যক্ষ জামাল হোসেন জানান, সরকারিভাবে প্রত্যেকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য দাবি করেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বদরুন নাহার ইয়াছমিন বলেন, কর্তৃপক্ষের পত্র পেয়ে শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য সকল প্রতিষ্ঠান প্রধানদের কাছে পত্র প্রেরণ করেছি এবং মৌখিকভাবে পরামর্শ দিচ্ছি।
এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুজর মোঃ ইজাজুল হক ‘আলোকিত বাংলাদেশকে’ বলেন, যেসকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নাই তার তালিকা করে আগামী জেলা পরিষদের মাসিক সভায় উপস্থাপন করে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
দুমকিতে অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই শহীদ মিনার
আরও পরুনঃ কলাপাড়া স্বাস্থ্য প্রশাসক ডা. লেলিনের অপসারণ ও শাস্তির দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান