ঢাকা ০৪:৩৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৩ মার্চ ২০২৫
সংবাদ শিরোনামঃ
বিশিষ্টজনদের নিয়ে নারায়ণগঞ্জ মহানগর জামায়াতের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত “বাউফল সাংবাদিক ক্লাব” এর কমিটি ঘোষণা রূপগঞ্জে যানজট নিরসনে শতাধিক শিক্ষার্থী ও স্বেচ্ছাসেবীর দায়িত্ব পালন কুয়াকাটায় ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগ স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতার বিরুদ্ধে বন্দর ও কলাগাছিয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের উদ্যোগে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত গাজায় নির্বিচারে বোমা হামলা ও গণহত্যার প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জ খেলাফত মজলিসের বিক্ষোভ মিছিল দুমকিতে গণধর্ষণের ঘটনায় অপর আসামি সিফাত মুন্সি গ্রেফতার স্কাউট পিএস চূড়ান্ত মূল্যায়নে বরিশাল বিভাগে কলাপাড়া সেরা নারায়ণগঞ্জে ছাত্রশিবিরের মতবিনিময় সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জে বিক্ষোভ মিছিল

বাউফলে চোর সন্দেহে এক যুবককে অভিনব কায়দায় নির্যাতন

নুপুর আক্তার
  • আপডেটঃ ০৪:৪৩:৩৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৪
  • / 429

চোর সন্দেহে এক যুবককে অভিনব কায়দায় নির্যাতন

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নে গরু চোর সন্দেহে এক যুবককে অভিনব কায়দায় নির্যাতন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এতে যুবকটি আহত হয়ে বাউফল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে।

নির্যাতনের শিকার ওই যুবকের নাম মোঃ সোহাগ মুন্সি (২৭), তিনি ওই ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের চর ওয়াডেল এলাকার বাসিন্দা মোঃ ওমর মুন্সির ছেলে। সে পেশায় একজন জেলে।

চিকিৎসাধীন অবস্থায় আহত মোঃ সোহাগ মুন্সি বলেন, গত বুধবার রাতে চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের খানকা নামক স্থানের বাসিন্দা আলিমাত চৌকিদারের ৪টি গরু ও লোকমান খার ২টি গরু চুরি হয়। এদিকে শনিবার ১৩ই জানুয়ারি ২০২৪ খ্রিঃ আমি আমার বাবার সাথে আমাদের পারিবারিক বিষয় নিয়ে ঝগড়াঝাটি হয়। আমি রাগ করে বিকেলের দিকে কালাইয়া লঞ্চ দিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়ে ধুলিয়া পর্যন্ত আসি।

এদিকে হঠাৎ স্পীডবোট দিয়ে আমার পাশের বাড়ির ফোরকান খা, লোকমান খা, আনার কাজি, সিদ্দিক খা, হেমায়েত খা, খোকন খা, আবদুল খা, হামেদ গাজি ও আলিমাত চৌকিদার সংঘবদ্ধ হয়ে এসে আমাকে ধরে নিয়ে আসে। আমি কিছু বুজে ওঠার আগেই চন্দ্রদ্বীপ চেয়ারম্যান ঘের নামক স্থানে নামিয়ে তারা আমাকে বেধড়ক মারধর করে। সেখান থেকে আমাকে মারতে মারতে নিয়ে যায় আলিমাত চৌকিদারের ঘরে।

আহত মোঃ সোহাগ আরও বলেন, আলিমাত চৌকিদারের ঘরে আমাকে সারারাত আটকিয়ে রেখে বিভিন্ন ভাবে মারধর সহ আমার হাতে পায়ে সুই ঢুকিয়ে নির্যাতন চালায়। রোববার বেলা এগারোটার দিকে তারা সবাই মিলে খানকা ক্লাবে নিয়ে আবারও মারধর সহ নির্যাতন চালায়। পরে আমার পরিবারের লোকজন আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। আমি কোনও গরু চুরির সাথে জরিত না এবং তাদের কোনও গরু আমি চুরি করিনি।

আমাকে নির্যাতনের বিচার চাই।

আহত মোঃ সোহাগ মুন্সির বাবা মোঃ ওমর মুন্সি বলেন, আমার ছেলে আমার সাথে ঝগড়াঝাটি করে রাগ করে ঢাকা চলে যায়। পরে আজকে সকালে শুনি তাকে গরু চুরির চোর সন্দেহে লঞ্চ থেকে এনে সারারাত আটকিয়ে নির্যাতন করেছে তারা। আমার ছেলে সবসময় নদীতে জাল নিয়ে মাছ ধরায় ব্যস্ত থাকে। এমন কর্মকাণ্ডে সে জরিত না। তাই আমি আমার ছেলেকে বিনাঅপরাধে নির্যাতন করায় বিচার দাবি করছি।

এপ্রসঙ্গে অভিযুক্তদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও প্রতিবেদক ব্যর্থ হওয়ায় কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এব্যাপারে স্থানীয় চেয়ারম্যান আলকাস মোল্লা বলেন, ঘটনাটি আমাকে জানালে আমি তাদের বলেছি যে তোমরা সবাই মিলে মারধর না করে সোহাগ কে জিজ্ঞাসা করে কথা বের করো। পরে তারা নাকি জিজ্ঞাসা করতে গিয়ে সোহাগকে উত্তম মাধ্যম দিয়েছে। পরে আবার আজকে রোববার ক্লাবে ডেকে সোহাগকে জিজ্ঞাসা করা হলে সে তাকে নির্দোষ দাবি করে। পরে আমি চলে আসি এবং শুনতে পাই তারা নাকি তাকে আবার মারধর করেছে। এখন তাদের বিষয় তারা কি করবে?

অপর এক সূত্রে জানা যায়, চন্দ্রদ্বীপে মাছ ধরার পাশাপাশি কৃষকের সম্বল গরু মহিষ লালন পালন করে জীবিকা নির্বাহ করা। কিন্তু রাতের আধারে একদল সংঘবদ্ধ চোর চক্রের সক্রিয় সদস্যরা সেই গরু মহিষ চুরি করে নিঃস্ব করে দিচ্ছে কৃষকদের। গরু মহিষ চোরের উৎপাতে অতিষ্ঠ এলাকার সাধারণ মানুষজন।

এবিষয়ে বাউফল থানার ওসি শোনিত কুমার গায়েন বলেন, ঘটনাটি শুনে সাথে সাথে হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে এবং এব্যাপারে এখনো কোনও অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

বাউফলে চোর সন্দেহে এক যুবককে অভিনব কায়দায় নির্যাতন

আপডেটঃ ০৪:৪৩:৩৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৪

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নে গরু চোর সন্দেহে এক যুবককে অভিনব কায়দায় নির্যাতন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এতে যুবকটি আহত হয়ে বাউফল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে।

নির্যাতনের শিকার ওই যুবকের নাম মোঃ সোহাগ মুন্সি (২৭), তিনি ওই ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের চর ওয়াডেল এলাকার বাসিন্দা মোঃ ওমর মুন্সির ছেলে। সে পেশায় একজন জেলে।

চিকিৎসাধীন অবস্থায় আহত মোঃ সোহাগ মুন্সি বলেন, গত বুধবার রাতে চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের খানকা নামক স্থানের বাসিন্দা আলিমাত চৌকিদারের ৪টি গরু ও লোকমান খার ২টি গরু চুরি হয়। এদিকে শনিবার ১৩ই জানুয়ারি ২০২৪ খ্রিঃ আমি আমার বাবার সাথে আমাদের পারিবারিক বিষয় নিয়ে ঝগড়াঝাটি হয়। আমি রাগ করে বিকেলের দিকে কালাইয়া লঞ্চ দিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়ে ধুলিয়া পর্যন্ত আসি।

এদিকে হঠাৎ স্পীডবোট দিয়ে আমার পাশের বাড়ির ফোরকান খা, লোকমান খা, আনার কাজি, সিদ্দিক খা, হেমায়েত খা, খোকন খা, আবদুল খা, হামেদ গাজি ও আলিমাত চৌকিদার সংঘবদ্ধ হয়ে এসে আমাকে ধরে নিয়ে আসে। আমি কিছু বুজে ওঠার আগেই চন্দ্রদ্বীপ চেয়ারম্যান ঘের নামক স্থানে নামিয়ে তারা আমাকে বেধড়ক মারধর করে। সেখান থেকে আমাকে মারতে মারতে নিয়ে যায় আলিমাত চৌকিদারের ঘরে।

আহত মোঃ সোহাগ আরও বলেন, আলিমাত চৌকিদারের ঘরে আমাকে সারারাত আটকিয়ে রেখে বিভিন্ন ভাবে মারধর সহ আমার হাতে পায়ে সুই ঢুকিয়ে নির্যাতন চালায়। রোববার বেলা এগারোটার দিকে তারা সবাই মিলে খানকা ক্লাবে নিয়ে আবারও মারধর সহ নির্যাতন চালায়। পরে আমার পরিবারের লোকজন আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। আমি কোনও গরু চুরির সাথে জরিত না এবং তাদের কোনও গরু আমি চুরি করিনি।

আমাকে নির্যাতনের বিচার চাই।

আহত মোঃ সোহাগ মুন্সির বাবা মোঃ ওমর মুন্সি বলেন, আমার ছেলে আমার সাথে ঝগড়াঝাটি করে রাগ করে ঢাকা চলে যায়। পরে আজকে সকালে শুনি তাকে গরু চুরির চোর সন্দেহে লঞ্চ থেকে এনে সারারাত আটকিয়ে নির্যাতন করেছে তারা। আমার ছেলে সবসময় নদীতে জাল নিয়ে মাছ ধরায় ব্যস্ত থাকে। এমন কর্মকাণ্ডে সে জরিত না। তাই আমি আমার ছেলেকে বিনাঅপরাধে নির্যাতন করায় বিচার দাবি করছি।

এপ্রসঙ্গে অভিযুক্তদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও প্রতিবেদক ব্যর্থ হওয়ায় কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এব্যাপারে স্থানীয় চেয়ারম্যান আলকাস মোল্লা বলেন, ঘটনাটি আমাকে জানালে আমি তাদের বলেছি যে তোমরা সবাই মিলে মারধর না করে সোহাগ কে জিজ্ঞাসা করে কথা বের করো। পরে তারা নাকি জিজ্ঞাসা করতে গিয়ে সোহাগকে উত্তম মাধ্যম দিয়েছে। পরে আবার আজকে রোববার ক্লাবে ডেকে সোহাগকে জিজ্ঞাসা করা হলে সে তাকে নির্দোষ দাবি করে। পরে আমি চলে আসি এবং শুনতে পাই তারা নাকি তাকে আবার মারধর করেছে। এখন তাদের বিষয় তারা কি করবে?

অপর এক সূত্রে জানা যায়, চন্দ্রদ্বীপে মাছ ধরার পাশাপাশি কৃষকের সম্বল গরু মহিষ লালন পালন করে জীবিকা নির্বাহ করা। কিন্তু রাতের আধারে একদল সংঘবদ্ধ চোর চক্রের সক্রিয় সদস্যরা সেই গরু মহিষ চুরি করে নিঃস্ব করে দিচ্ছে কৃষকদের। গরু মহিষ চোরের উৎপাতে অতিষ্ঠ এলাকার সাধারণ মানুষজন।

এবিষয়ে বাউফল থানার ওসি শোনিত কুমার গায়েন বলেন, ঘটনাটি শুনে সাথে সাথে হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে এবং এব্যাপারে এখনো কোনও অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।